রমজান মাসে মৃত্যু বরণ করলে কি আজাব হবে?
রমজান মাসে বা জুমার দিনে মৃত্যু ফজিলতপূর্ণ হওয়া এবং জুমার দিনে মৃত্যু হলে বান্দার জান্নাত নসিব হবে বা সে জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাবে এরকম সব হাদিস দুর্বল বা অশুদ্ধ।
একটি হাদিস থেকে ওলামায়ে কেরামদের মধ্যে কেউ কেউ একটা বিষয় উৎঘাটন করেছেন। সেটি হচ্ছে এই— রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যখন রমজান মাস আসে তখন রহমতের দরজাগুলো খুলে দেওয়া হয় আর জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়।’
একইভাবে রমজান মাসে মৃত্যুর কোনো বিশেষ ফজিলতের কথাও সহিহ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত নয়।
যে ব্যক্তি সৎকাজ করে ঈমানের সাথে মৃত্যু বরণ করবে সে জুমার দিন মৃত্যু বরণ করুক বা অন্য যে কোনো দিন সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। মৃত্যুর দিন ক্ষণের এ ক্ষেত্রে কোনো ভূমিকা নেই।
যে শিরকের ওপর মৃত্যু বরণ করে সে যে সময় যে স্থানেই মৃত্যু বরণ করুক না কেনো, জাহান্নামে যাবে।
কারণ হচ্ছে, কবরের আজাব জাহান্নাম থেকে হচ্ছে নাকি অন্য কোনো জায়গা থেকে হচ্ছে, এই সম্পর্কে রাসুল (সা.)-এর হাদিস থেকে বোঝা যাচ্ছে, জাহান্নাম থেকে কবরের আজাব হয়, কিন্তু অন্য স্থান থেকে, অন্য কোনো উৎস থেকে কবরের আজাব হয় না, এই মর্মে রাসুল (সা.)-এর কোনো বক্তব্য প্রমাণিত হয়নি। বরং রাসুল (সা.)-এর সহিহ বুখারীর যে হাদিসটি রয়েছে, সেখান থেকে বোঝা যায় যে, কবরের আজাব শুধু জাহান্নাম থেকে হয় না, বিভিন্ন অপরাধের কারণেও কবরের আজাব হতে পারে। যেটি আল্লাহর নবী (সা.) হাদিসের মধ্যে উল্লেখ করেছেন। তাই কবরের আজাব রমজান মাসে বন্ধ থাকে এই বক্তব্য যথাযথ নয়, সঠিকও নয়।
দ্বিতীয়ত হচ্ছে, যদি ধরে নেওয়া হয় যে, রমজান মাসে কবরের আজাব বন্ধ থাকবে, এর অর্থ হচ্ছে শুধু রমজান মাসের জন্য বন্ধ থাকবে। রমজান মাসের পরে আবার কবরের আজাব শুরু হবে।
যে-ই কবরের আজাবের জন্য উপযুক্ত, তাঁর আজাব বজায় রাখা হবে। শুধু রমজান মাসকে বিশেষ গুরুত্বের কারণে আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা হয়তো তাঁদের শাস্তি লাঘব করবেন, এটা হতে পারে।
দিদারুল ইসলাম রাসেল
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়,কুষ্টিয়া।